অপসংস্কৃতির ভয়াল থাবা ও মুসলিমদের মাধ্যমেই তার প্রচার প্রসার।

 অপসংস্কৃতির ভয়াল থাবা ও মুসলিমদের মাধ্যমেই তার প্রচার প্রসার।



যদিও আমরা বংশগতভাবে মুসলিম এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে বসবাস করি, তবুও আমরা চর্চা করি অমুসলিমদের সংস্কৃতি। বিশেষ করে ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতি চর্চাই বেশি হয় আমাদের মাঝে।যদিও আমরা অনেকেই পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকে অত্যাধুনিক ভেবে বসি এবং সেই অত্যাধুনিকতার রং নিজের দেহে মাখতেই পাশ্চাত্যের চর্চা করি। আর ভারতীয়দের সাথে এদেশের কিছু মানুষ অতোপ্রোতোভাবে জড়িয়ে ছিলো এবং ঠিক সেকালের মতে একালেও জড়িয়ে আছি কিছু মানুষ। যদিও ইসলামে আমাদের নির্দিষ্ট বিধিবিধান আছে, রয়েছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি তবুও আমরা ইসলামী বিধানকে লঙ্ঘন করে অন্য সংস্কৃতির চর্চা ও তা আমাদের মাঝে বাস্তবায়ন করেই যাচ্ছি। সেই সাথে সেসব সংস্কৃতি যেন বিস্তর বিকাশ লাভ করতে পারে তাই বিজ্ঞাপন প্রচার করছি।


ইসলাম আমাদেরকে ইসলামী সংস্কৃতি ব্যতীত অন্যান্য সংস্কৃতির চর্চার কোনো অনুমোদন দেয়নি, কম বেশি সব সংস্কৃতিই ইসলামী বিধিবিধানের পরিপন্থি। আর ইসলামী বিধিবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কাজ আমরা মুসলিমরা করতে পারিনা।


আমি এখানে শারয়ী কোনো মাসয়ালা দিচ্ছি না। শুধু কিছু বিষয় আলোচনার চেষ্টা করছি।

আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে আমরা নিজেদের মুসলিম দাবি করি অথচ ইসলামের প্রাথমিক বিধানগুলো মানা তো দূরের কথা সেসব সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ কোনো জ্ঞানও নেই। আমরা ১০/২০ জন গান, নৃত্য বা অভিনয় চর্চাকারী শিল্পির নাম যতটা অকপটে বলে ফেলতে পারি ইসলামের প্রসিদ্ধ ১জন কবির নামও বলতে পারিনা সেভাবে। আমরা মুসলিম কিংবদন্তিদের নাম জানা তো দূরে থাক শুনিইনি কখনো।


এর প্রধান কারন মূলতো আমরা ইসলামী জ্ঞান অর্জন ও ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পরিবর্তে আমরা ডুবে আছি ছয় তারের সুর শলাকার সুরে, আমরা গভীরভাবে আচ্ছন্ন হয়ে আছি ইলেকট্রিক গিটারের বাজনায়।ইলেকট্রিক গিটারের শব্দ শুনলে আমাদের লোম দাঁড়িয়ে যায় রোমাঞ্চতায় অথচ আমরা এতোটা গাফিল যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ক্বারীর কন্ঠের তিলাওয়াতও আমাদের মনে বিন্দুমাত্র আলোড়ন তুলতে পারেনা। ইসলামী বিষয়গুলোতে কেমন যেনো নির্লিপ্ত হয়ে গেছি আমরা।কোনো অনুভুতি কাজ করে না এসবে। বিরক্তিকর মনে হয় এসব।


আমরা নিউটন, আইনস্টাইন এদের নাম এবং পরিচয় ভালোভাবে জানলেও মুসলিম মহান বিজ্ঞানীদের নাম শুনিইনি এখনো। মুসলিমদের কতশত আবিষ্কার সম্পর্কে এখনো আমরা অজ্ঞাত। 


আমরা খেলার ক্ষেত্রেও যতজন ফুটবালের নাম বলতে পারি সেই হিসেবে একজন মুসলিম সাহাবীর নাম বলতে পারবো না যে কে ঘোড়া চালনায় পারদর্শী ছিলেন আর কে তরবারী চালনায় দক্ষ ছিলেন।


আমরা পাশ্চাত্যের মানবতাবাদীদের সম্পর্কে অনেক জানি, কিন্তু রাসূল (সা.) যে অন্ধকার যুগে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটা জানিই না। যিনি দাসপ্রথা বিলুপ্ত করেছিলেন, সব বংশের মর্যাদা সমান করেছিলেন,সব মানুষকে সমান অধিকার দিয়েছিলেন, নারীদেরকে ঘরের রানী বানিয়েছিলেন, সেই মহামানব মুহাম্মদ সা. এর জীবনী আমরা জানিই না।


আমরা মহান সুলতান সালাহউদ্দিন আয়ুবী সম্পর্কে কিছুই জানিনা। যখন ক্রুসেডাররা নিরিহ মুসলিম নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবার উপর অমানুষিক নির্যাতন করেছিলো ঠিক তখনই ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মুসলিমদের অধিকার আদায় করেন এবং তাদের স্ত্রী সন্তানদেরও সুন্দর জীবনযাপনের সুযোগদেন যারা মুসলিমদের নির্যাতন করতো।


কতো উদার মুসলিমরা।কতো প্রশান্তিময় ধর্ম ইসলাম।কতটা শালীন ইসলামী সংস্কৃতি তা আমরা মুসলিম হয়েও অনুধাবন করতে পারলাম না। অনুধাবন করতে পারলে তো আর অপসংস্কৃতির চর্চা করে আবার গর্ববোধ করতাম না।


আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান অর্জনের তৌফিক দান করুন। (আমিন)


-আহমাদ তাজনুর হাবীব

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post